[email protected] ঢাকা | শনিবার, ১৫ই মার্চ ২০২৫, ৩০শে ফাল্গুন ১৪৩১
thecitybank.com

কোথাও ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলে ছাত্রদল দায়ী থাকবে : জাহিদুল ইসলাম

চাঁপাই জার্নাল ডেস্ক:

প্রকাশিত:
২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২১:০১

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। ছবি: সংগ্রহীত

খুলনা প্রকৌশল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ক্যাম্পাসে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পেছনে ছাত্রশিবিরের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ওই ঘটনার জন্য ছাত্রশিবিরের কোনো দায় নেই। কুয়েটসহ কোথাও ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হলে তার জন্য ছাত্রদল দায়ী থাকবে।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবের লিয়াকত আলী মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বুধবার অনুষ্ঠিত হওয়া কুয়েটের জরুরি সিন্ডিকেটের তথ্য তুলে ধরে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ছাত্রদল দুই-তিন দিন আগ থেকে ক্যাম্পাসে প্রচারণা চালাচ্ছে। এ ঘটনা থেকেই সূত্রপাত হয়েছে। এরপর তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়েছে। তারপর বাইরে থেকে বহিরাগত সন্ত্রাসী নিয়ে এসে হামলা চালিয়েছে। এর জন্য দায় স্পষ্ট হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন ফুটেজে দেখেছি ওই হামলার সঙ্গে ছাত্রলীগ ও যুবলীগ সম্পৃক্ত হয়েছিল।

কুয়েটসহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হওয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে জাহিদুল ইসলাম বলেন, বন্ধ হলে এর জন্য ছাত্রদল দায়ী থাকবে। কুয়েটে যে ঘটনাটা ঘটলো- আমি মনে করি যদি কোথাও সামনে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হয় এর জন্য স্পষ্ট, প্রমাণ সহকারে ছাত্রদল দায়ী থাকবে। 

তিনি বলেন, কুয়েটে সব রাজনৈতিক সংগঠনকে লাল কার্ড দেখানো হয়েছে। যদি এমন ঘটনা না ঘটতো তাহলে কী আজকে লাল কার্ডের ঘটনা ঘটতো। আজকে কী এই অস্থিতিশীল পরিবেশ সারা দেশে তৈরি হতো। তাহলে এর জন্য দায়ী কে? আমাদের ছাত্রদলের সভাপতির ভাষায়-শিবিরের ওপর চালিয়ে দেন।

‘ছাত্রশিবির একটি গুপ্ত সংগঠন’ বলে ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন থেকে যে মন্তব্য করা হয় সে প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাহিদুল ইসলাম বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১৩২টি শাখার প্রতিটিতেই প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে সেটআপ সম্পন্ন হয়। পাল্টা প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ওই ১৫ বছরে ছাত্রদলের কোনো কমিটি যথা সময়ে হয়েছে কিনা? বরং আমরা দেখেছি বিভিন্ন স্থানে ছাত্রদলের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে গ্রুপিং লবিং হয়েছে। সুতরাং যারা নিজেদের সংগঠনকেই ঠিকমতো চালাতে পারে না তাদের মুখে অন্য সংগঠন নিয়ে এমন মন্তব্য কেবলই হাস্যকর।

কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ছাত্র রাজনীতির সজ্ঞায়ন হলো- সেখানে শিক্ষামূলক কার্যক্রম থাকবে, জ্ঞানচর্চার প্রতিযোগিতা থাকবে, সেবামূলক কার্যক্রম থাকবে। শিক্ষার্থীদের মতের বাইরে ছাত্রশিবির কোনো মত চাপিয়ে দেয়নি, দেবেও না। শিক্ষার্থীরা যা চাইবে ক্যাম্পাসে তাই হবে।

গতকাল ছাত্রদলের করা একটি প্রশ্ন আজ ছাত্রশিবির সভাপতির কাছে করা হলে তিনি পাল্টা প্রশ্ন করে বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে শিক্ষার্থী কেন্দ্রীয় ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি হয়েছেন তিনি কি তার শিক্ষাজীবনে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছিলেন? অথবা তিনি কি কোনো রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করেছেন? তিনি মূলত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়েই তার কার্যক্রম পরিচালনা করেছেন।’

 জাহিদুল ইসলাম বলেন, যে ছাত্র রাজনীতির কারণে মানুষ হত্যা করতে হয়, যে ছাত্র রাজনীতির কারণে মায়ের বুক খালি হয়, সেই ছাত্র রাজনীতি আমরাও চাই না। আমরা সেই ধরনের ছাত্র রাজনীতি চাই- যার মধ্য দিয়ে মেধার চর্চা হবে, যার মধ্য দিয়ে সেবার প্রতিযোগিতা হবে, যার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক সচেতনতা ও গঠনমূলক কাযক্রম পরিচালিত হবে।

বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে তথা ছদ্মনামে ছাত্রশিবির বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে- ছাত্রদলের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ছাত্রশিবির সভাপতি বলেন, শেখ হাসিনা বিরোধী আন্দোলনের সময়তো এমন প্রশ্ন কেউ করেননি। তাহলে এখন কেন ?

ছাত্রশিবির গুপ্ত সংগঠন নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিবির আগেও যেমন তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে তেমনি ৫ আগস্টের সরকার পতনের পরও আহতদের পাশে যাওয়া, শহীদ পরিবারের পাশে থাকা, ক্যাম্পাসে মেধার চর্চা করা ইত্যাদি কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। তার খুলনা সফরও বিজ্ঞানভিত্তিক ক্যাম্পাস গড়ার অংশ এবং মেধাবী শিক্ষার্থী তৈরির মধ্য দিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার অংশ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্যে খুলনা মহানগর ছাত্রশিবিরের সভাপতি আরাফাত হোসেন বলেন, কেন্দ্রীয় সভাপতি খুলনা সার্কিট হাউজে অনুষ্ঠিত হওয়া সায়েন্স ফেস্ট পরিদর্শন ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এসেছেন। যেহেতু খুলনায় এসেছেন তাই তিনি খুলনার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করতে চান। তারই অংশ হিসেবে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক মু. নোমান হোসেন নয়ন, মহানগরী সেক্রেটারি রাকিব হাসান, সাহিত্য সম্পাদক বেলাল হোসেন, সমাজসেবা সম্পাদক আব্দুর রশিদ, সরকারি আযম খান কমার্স কলেজের সভাপতি তারেক হোসেন প্রমুখ। 

ডেস্ক/আআ


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর