[email protected] ঢাকা | শনিবার, ১৫ই মার্চ ২০২৫, ৩০শে ফাল্গুন ১৪৩১
thecitybank.com

সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ‘ট্রামকার্ড’ বানিয়ে পুকুর দখলের চেষ্টা

নিজস্ব প্রতিনিধি:

প্রকাশিত:
১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮:১৮

ছবি: সংগৃহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ‘ট্রামকার্ড’ হিসেবে ব্যবহার করে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল ওদুদ এক ব্যবসায়ীর পুকুর দখলে নেয়ার চেষ্টা করেন। ২০১৭ সালে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের টংপাড়ার ওই পুকুর কিনে নেয়ার প্রস্তাব দেন আব্দুল ওদুদ।

তবে ওই ব্যবসায়ী পুকুর বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় পুকুরপাড়ে বসবাস করা সংখ্যালঘুদের ব্যবহার করে জবর দখলের চেষ্টা করেন তিনি। এনিয়ে শুরু হয় দ্বন্দ্ব। উভয়পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা করেন। বিষয়টি নিয়ে পুলিশ হেকোর্টোরের নির্দেশে ঘটনার তদন্ত করেন রাজশাহী রেঞ্জর তৎকালিন অতিরিক্ত ডিআইজি নিশারুল আরিফ।

একই বিষয়ে তদন্ত করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের তৎকালিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইকবাল হোসাইন। দুই পুলিশ কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদনে ব্যবসায়ীর জমি জবর দখলের বিষয়টি উঠে আসে। সংখ্যালঘুদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার সুপারিশ করেন তারা। পুলিশ প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে পুকুরপাড়ে থাকা ২৫ পরিবারের মধ্য ১৩ পরিবারকে আশ্রয়ণ প্রকল্পে ঘর দেয়া হয়। তারপর দুই জায়গা তারা দখলে রেখেছেন।

ব্যবসায়ী টি ইসলাম জানান, দুর্বল প্রশাসন আর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্যের নগ্ন হস্তক্ষেপের কারণে তাদের সরানো সম্ভব হয়নি। তার দাবি, এখনকার পুলিশ প্রশাসনও একই পথে হাঁটছেন। আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি পালিয়ে যাওয়ার পর পুকুর দখলে নিতে নতুন চক্র গড়ে উঠেছে। পুলিশ দখলদার সিন্ডিকেটের দারা প্রভাবিত হয়ে গত বুধবার আমাকে প্রধান আসামি করে মিথ্যা মামলা নিয়েছে। বৃহস্পতিবার আমিসহ ১২ জন আদালত থেকে জামিন নিয়েছি।

টি ইসলাম আরও জানান, কয়েকদিন আগে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সেখানে গিয়ে পুকুরের লীজ গ্রহীতাদের হা-পা ভেঙে দেয়ার হুমকি দেন। ইউএনও উসকানি দিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগিয়েছেন। পুকুরের মাছ পাহারা দেয়ার জন্য একটি অস্থায়ী কুঁড়েঘর নির্মাণ করেছিল লীজ গ্রহীতারা। পুলিশের উপস্থিতে গভীর রাতে ওই ঘর ভেঙে ফেলে সংখ্যালঘু দুর্বৃত্তরা। এবং ঘরে থাকা মাছের খাবার ও পুকুরের মাছ লুট করে নিয়ে যায়। উল্টো মামলা দেয়া হয় আমি এবং লীজগ্রহীতাদের নামে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. তাছমিনা খাতুন বলেন, ১ মাস আগে টংপাড়ার সংখ্যালঘুরা অভিযোগ দিয়েছেন তাদের পুকুর দখলের চেষ্টা করছেন টি ইসলামের লোকজন। কয়েকদিন আগে ২০-২৫ জন লোক এসে বলেন আমাদের পা ভেঙে দিয়েছেন। ঘরবাড়িতে ইটপাটকেল মেরেছে। সেদিন আমি ঘটনাস্থলে গেছিলাম। সংখ্যলঘুদের উদ্দেশ্য করে আমি বলেছি মারতে আসলে আপনারাও প্রতিহত করবেন। আমি কারো হাত-পা ভেঙে দেয়ার কথা বলতে পারি না। ইউএনও বলেন, পুকুরের মালিক তিনি হলে আমাদের বলবেন, আমরা তাকে দখলে সহযোগিতা করবো।

এ প্রসঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, ওই পুকুরের কাগজ টি ইসলামের হলেও দখলে আছে সংখ্যালঘুরা। পুকুর দখলে নিতে আদালতের আদেশের প্রয়োজন আছে। কিন্তু তিনি নিয়ম না মেনে পুকুর দখলে নিতে চান। সেখানে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এজন্য মামলা নেয়া হয়েছে। কে জড়িত কে নয়, সেটি তদন্তে জানা যাবে।

ফাআচৌ/আআ


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর