প্রকাশিত:
১৬ মে ২০২৫, ১১:৪৭
নিষিদ্ধ ঘোষিত দল আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগম গ্রেপ্তার হওয়ার আগে দীর্ঘ তিন মাস আত্মগোপনে ছিলেন মানিকগঞ্জের সিংগাইরে ভাইয়ের বাড়িতে। এরপর গোপনে ঢাকায় এসে এক বান্ধবীর নামে ভাড়া নেওয়া বাসায় আশ্রয় নেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৬ মে) মমতাজের আপন ভাই এবারত হোসেন জানান, গত ৫ আগস্টের পরদিন থেকে মমতাজ বেগম তাদের সিংগাইরের চরদুর্গাপুর এলাকার বাড়িতে ছিলেন। এই সময়ের মধ্যে তিনি বাড়ির বাইরে একবারের জন্যও বের হননি। এমনকি তার আত্মগোপনের খবর জানতেন না পাশের বাড়ির লোকজনও। পরিবারের সদস্যরাও বিষয়টি গোপন রাখতেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই বাড়িসহ আশপাশের এলাকাজুড়ে সিসি ক্যামেরার কড়া নজরদারি ছিল। কেউ বাড়িতে প্রবেশের চেষ্টা করলে জানিয়ে দেওয়া হতো, বাড়িতে কেউ নেই। এভাবে গোয়েন্দা সংস্থা এবং স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ এড়িয়ে নিরাপদেই অবস্থান করছিলেন মমতাজ।
ভাই এবারত আরও জানান, দীর্ঘ তিন মাস আত্মগোপনে থাকার পর এক গভীর রাতে মমতাজ বোরকা পরে কালো গ্লাস লাগানো মাইক্রোবাসে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন এবং সরাসরি ধানমন্ডির ভাড়া বাসায় ওঠেন। বাসাটি ভাড়া নেওয়া হয় তার ঘনিষ্ঠ বান্ধবী নিপার নামে। নিপার স্বামী বিদেশে থাকায় তিনিই মমতাজের সব ধরনের দেখভাল করতেন। আর আর্থিক জোগান দিতেন মমতাজের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) জুয়েল।
এদিকে মমতাজের আত্মগোপনের বিষয়ে জানতে তার তৃতীয় স্বামী ডা. এসএম মঈন হাসানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিশ্চিত করেন যে, তিন বছর ধরে তাদের মধ্যে কোনো যোগাযোগ নেই। তিনি আরও জানান, কিছুদিন মমতাজ তার দ্বিতীয় স্বামী মানিকগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র মো. রমজান আলীর মেয়ে রুনুর মোহাম্মদপুরের বাসায়ও ছিলেন। তবে রমজানের আত্মীয় সানোয়ার হোসেন এই দাবি অস্বীকার করেছেন।
ডা. মঈন আরও বলেন, মমতাজের নামে মহাখালীর ডিওএইচএস এলাকায় পাঁচতলা একটি বাড়ি রয়েছে, যা বর্তমানে তার পিএস জুয়েলের দখলে। তবে এ বিষয়ে জুয়েলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও সাড়া মেলেনি।
মমতাজ বেগম বর্তমানে পুলিশের চার দিনের রিমান্ডে রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল ধানমন্ডির ভাড়া বাসা থেকে।
এ বিষয়ে সিংগাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জেওএম তৌফিক আজম বলেন, তিনি দুই মাস আগে থানায় যোগ দিয়েছেন। মমতাজের আত্মগোপনের বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
ডেস্ক/আআ
মন্তব্য করুন: