[email protected] ঢাকা | শনিবার, ১৫ই মার্চ ২০২৫, ৩০শে ফাল্গুন ১৪৩১
thecitybank.com

চাঁপাইনবাবগঞ্জে আজাহারীর মাহফিলকে কেন্দ্র করে চাঁদাবাজি চলছে: বিএনপি নেতা হারুন

নিজস্ব প্রতিনিধি:

প্রকাশিত:
৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২২:১০

বিএনপি নেতা মো: হারুনুর রশিদ। ছবি: চাঁপাই জার্নাল

চাঁপাইনবাবগঞ্জে মিজানুর রহমান আজাহারীর মাহফিল উপলক্ষে চাঁদাবাজি চলছে বলে অভিযোগ করেছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনের সাবেক সংসদ সংসদ ও বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা হারুনুর রশিদ।

শুক্রবার (০৭ জানুয়ারি) বিকেলে চাঁপাইনববাগঞ্জ শহরের টাউন হাইস্কুল মাঠে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর বিএনপির ১৫ নং ওয়ার্ড কতৃক আয়োজিত আলোচনা সভায় এইসব কথা বলেন তিনি।

তিনি আরোও বলেন, আমার বাড়ির কাছে একটি তাফসীর মাহফিল আগামী ২২ তারিখ অনুষ্ঠিত হবে। তাফসীরকারক হিসেবে মিজানুর রহামন আজাহারী সাহেব আসবেন। একমাস ব্যাপী জেলা জুড়ে প্রচার চলছে। আর একমাস ব্যাপী চাঁদাবাজিও চলছে। সমস্ত জায়গায় চাঁদাবাজি চলছে। ব্যাংক, শিল্পকারখানায় চাঁদাবাজি এবং মানুষের বাড়ি বাড়িতে গিয়ে চাঁদাবাজি চলছে। ওটা কী তাফসীর মাহফিল হচ্ছে, আমি মিজানুর রহমান আজাহারী ভাইকে অনুরোধ করবো আপনি জনগণের সামনে হিসাব দিবেন, বিভাগীয় সমাবেশ করবেন চাঁপাইবনবাগঞ্জে কিন্ত তাফসীর মাহফিলের নাম করে কেন? এই তাফসীরের সভাপত্বি করছে জামায়াতরে (জেলা) আমীর আবু জার গিফারী আর প্রধান অতিথি কে…..? নুরুল ইসলাম বুলবুল। তাহলে এটা তাফসীর নাকি জামায়াতের তাফসীর। তাই এই সমস্ত বিষয়ে জনগণ অত্যান্ত সজাগ আছে।

তাফসীর মাহফিল নিয়ে তিনি আরোও বলেন, জামায়াতের মৌলভীরাকে দেখছি বিভিন্ন জায়গায় তাফসীর মাহফিলের নাম করে দলীয় সভা করে বেড়াচ্ছে। এটা মুনাফেকি এবং জনগনের সাথে প্রতরণা। আপনি তাফসীর করবেন কুরআন হাদীসের আলোকে আলোচনা করবেন কিন্ত তাফসীর করতে গিয়ে জনগনকে হাত তুলাচ্ছেন আর বলছেন ইসলামের পক্ষে কারা কারা আছেন হাত তুলেন। যখন তারা হাত তুলছে তখন আবার বলছেন কারা কারা বুলবুলের পক্ষে আছেন?  তাফসীরে বসে এই ধরনের আলোচনা এক প্রকারের মুনাফেকী। আবার কখনো কখনো তাফসীর মাহফিলে হারুন এমপি আবার কখনো ফখরুল ইসলামকে নিয়ে সমালোচনা করছেন। এই ধরনের বক্তব্য যারা দিচ্ছেন, তাদেরকে বলবো এই ধরনের বক্তব্য থেকে বিরত থাকবেন।

ধানমন্ডি ৩২ ও আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘরে হামলার প্রসঙ্গ টেনে তিনি আরোও বলেন, যারা বাংলাদেশের মানুষের ভোটের অধিকারকে কেঁড়ে নিয়েছিল, সারাদেশে তাদের নির্মম পরিনিতি হয়েছে এবং জনগনের বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। হারাম টাকা দিয়ে তারা যে সমস্ত বাড়িঘর ও স্থাপনা নির্মাণ করেছিল সেগুলো আজকে বুলডিজার দিয়ে ভেঙ্গে গুড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। কারন দীর্ঘ পনের বছর তারা দেশের মানুষকে গুম করেছে, বিচার বর্হিভূত হত্যা করেছে এবং হাজার হাজার মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে বাড়ি ছাড়া করেছে। তার বহি:প্রকাশ এখনো থেমে নাই।

অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারের কার্যক্রম নিয়ে আমি বিষণ ভাবে উদ্বিগ্ন। কারন গত ছয়মাস আগে ড. ইউনুসের নেতৃত্বে একটি অন্তবর্তীকালীন সরকার গঠন হয়েছে। বিএনপিসহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল এই সরকারকে সমর্থন দিয়েছিল, যাতে এই সরকার ফেল না করে কিন্ত দিনের পর দিন আমরা হতাশ হচ্ছি। এই দেশের ছাত্র-জনতা শেখ মুজিবুর রহমানসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্থাপনা ভাঙ্গছে। এর দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে, এই ব্যার্থতার জন্য দায়ী সরকার। কারণ এই সোনার বাংলাদেশে এখনো কেন শেখ মুজিবের মুর‌্যাল ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তারসহ  তার পরিবারের নাম বিদ্যমান আছে। এছাড়া জনগন চাই শেখ হাসিনাসহ তার নেতাকর্মীদেরকে দ্রুত বিচারের মুখোমুখি করা হোক।

নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা নিয়ে তিনি আরোও বলেন, প্রফেসর ইউনুসের আছে আমাদের আহবান থাকবে স্বল্পতম সংস্কারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে যতদূত সম্ভব নির্বাচনের ব্যাবস্থা করুন। অবাধ, সুষ্ঠ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে একটি জনগনের সরকার প্রতিষ্ঠা করা হোক। কিন্ত এখনো দৃশমান নির্বাচনের ব্যাপারে সরকারের কোন আগ্রহ আছে কিনা তা প্রতিয়মান হচ্ছে না। সরকারের জায়গা থেকে এখনো সুস্পষ্ট কোন ঘোষণা নাই। তাই আমরা দাবী করবো যতদ্রুত সম্ভব নির্বচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। নির্বাচনের পথে হাঁটুন। জনগণের মধ্যে স্বস্তি ও আশ্বাস ফিরিয়ে দেন। জনগনের আকাংঙ্খা জনগন তাদের নির্বাচিত প্রার্থী নির্বাচিত করবে এবং জনগনের সমস্যা সংসদে নিরসন হবে। সংস্কার একটি দীর্ঘ ও চলমান প্রক্রিয়া । তাই সংস্কার কার্যক্রম চলবে এবং পাশাপাশি দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রাও আমাদেরকে শুরু করতে হবে।

এই সময় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক কাউন্সিল মাসিদুল হক নিখিলের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরোও বক্তব্য রাখেন, পৌর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম, পৌর বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল বারেক, থানা কৃষক দলের সদস্য সচিব তাসেম আলী, জেলা যুবদলের আহবায়ক তবিউল ইসলাম তারিফ ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান অনু, যুবদল নেতা মজিবুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবদলের সাধারণ সম্পাদক জামিউল হক সোহেল ও সাংগঠনিক সম্পাদক সামিরুল ইসলাম পলাশ ও সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক শাহিন আক্তার, জেলা ছাত্র দলের সাবেক সভাপতি সারোয়ার জাহান ও সহ-সভাপতি মিম ফজলে আজিমসহ প্রমুখ।

এমএএ/আআ


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর