প্রকাশিত:
৪ মার্চ ২০২৫, ১১:২০
চাঁপাইনবাবগঞ্জের বারোঘরিয়া বাজারে ০৪টি ককটেল হামলার ঘটনার দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের সাধারন সম্পাদক আব্দুর রাকিব।
সোমবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যা দিকে নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি ভিডিও পোস্ট করেন রাকিব। ১০ মিনিট ২৯ সেকেন্ডেরসেই ভিডিও বার্তায় ককটেল হামলার দায় স্বীকার করেন। পাশাপাশি ভিডিও বার্তায় ককটেল হামলার কারণ উল্লেখ করেন এবং ককটেল হামলায় কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও বলেন তিনি।
ভিডিও বার্তায় গণ অধিকার পরিষদের নেতা আব্দুর রাকিব বলেন, আশা করি আল্লাহর রহমতে আপনারা সবাই ভালো আছেন, সুস্থ আছেন এবং আল্লাহ আপনারাকে সুস্থ রাখুন, ভালো রাখুক এই দোয়া কামনা করি আল্লাহর কাছে। বারোঘরিয়া বাজারে ঘটে যাওয়া বিষয়টি অনেক দু:খজনক বিষয়। এর আগে বারোঘরিয়া বাজারে এমন কোন ঘটনা ঘটেনি বা আমরা ঘটতে দিইনি। আমার কারণে এই ঘটনা ঘটে গেছে তাই আমরা লজ্জিত, দু:খিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। তাই আপনারা সবাই আমাকে ক্ষমা করে দিবেন। কিন্ত বারঘরিয়া বাজারের কোন জনগণ, ব্যাবসায়ীকে উদ্দেশ্য করে আমি এই ঘটনা ঘটায়নি। আমার এই ঝামেলাটার উদ্দেশ্য মূলত ছিল বারঘরিয়া আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান হারুন অর রশিদ হারুন। এই হারুন চেয়ারম্যান বিভিন্ন সময় আমাকে জ্বালা জ্বতনা করেছে, আমার উপর জেল-জুলুম করেছে। তাই আমি এই কাজটি করতে বাধ্য হয়েছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার সময় এই হারুন চেয়ারম্যান আমাকে জামায়াত-শিবির ও মার্ডার মামলায় আমাকে জড়িত করেছিল। পাশাপাশি আমি বারোঘরিয়া বাজারে দোকান দিলে তা করতে দেয়নি। চাঁদা না দিলে ভেঙে ফেলা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, আ.লীগ নেতা হারুন-অর রশীদ আমার মতো অনেক মানুষের ওপর জুলুম নির্যাতন চালিয়েছে। নিরপরাধ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটিয়েছে। তার সহযোগী সেলিম দালাল ও সে মিলে বারোঘরিয়া বাজারের সব দোকান থেকে চাঁদাবাজি করেছে। তার সব অপরাধ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এলেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমি অবাক হয়েছি, সারাদেশে স্বৈরাচার সরকারের দোসরদের আটক করা হলেও তাকে আটক করা হয়নি।
গণঅধিকার পরিষদ নেতা আব্দুর রাকিব বলেন, আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আত্মসমর্পণ করব।আমার কারণে কারো কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়ে থাকলে তার ক্ষতিপূরণ দিয়ে দিব। কয়েক বছর আগে আমি ছোট ছিলাম তখন, আমার বাবার একটি দোকানও জোরপূর্বক ভেঙে ফেলেছিল হারুন চেয়ারম্যান। কিন্তু সেসময় প্রতিবাদ করতে পারিনি। তাই এখন সকল অপরাধের প্রতিশোধ নিতে এই ককটেল হামলা করা হয়েছিল। এটি ভুল হয়েছে, আমাকে সকলে ক্ষমা করে দিবেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান বলেন, ককটেল বিস্ফোরণের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাতেই সাকিবকে এবং শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে মোহাম্মদ আলী ওরফে গোদাকে গ্রেফতার করা হয়। এ ছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষরেদ সাধারন সম্পাদক রাকিবসহ কয়েকজনকে নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার বারোঘরিয়া বাজারে ও বারঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সামনে ০৪ টি ককটেল হামলা করে পালিয়ে যায়। ককটেল হামলায় ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি হারুন-অর-রশীদসহ ৬ জন আহত হয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বৃহস্পতিবার রাতেই অভিযান পরিচালনা করে সাকিবকে এবং শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে মোহাম্মদ আলী ওরফে গোদাকে গ্রেপ্তার করে যৌথ বাহিনী। এছাড়া এই ঘটনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাকিবকে প্রধান আসামি করে চারজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ১০ জন আসামি করে মামলা দায়ের করে পুলিশ।
এমএএ/আআ
মন্তব্য করুন: