chapaijournal@gmail.com ঢাকা | রবিবার, ১৬ই মার্চ ২০২৫, ২রা চৈত্র ১৪৩১
thecitybank.com

পূর্ব শত্রুতার জেরে

ইউপি চেয়ারম্যানের উপর গণ অধিকার পরিষদ নেতার ককটেল হামলা

নিজস্ব প্রতিনিধি:

প্রকাশিত:
২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০০:২৬

গণ অধকার পরিষদের নেতা রাকিব। ছবি: সংগ্রহীত

গণ অধকার পরিষদের নেতা রাকিব। ছবি: সংগ্রহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার বারোঘরিয়া বাজারে ০৪ টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটিয়েছে গণ অধিকার পরিষদের এক নেতা ও তার লোকজন। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাত ০৮ টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

পুলিশ মাধ্যমে জানা যায়, ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে পূর্ব শত্রুতার জেরে রাতে বারোঘরিয়া  বাজারে হঠাৎ করে ০৪ টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলা গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাকিব ও তার লোকজন। এই সময় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে বাজারে আতংক সৃষ্টি করে এবং মোটরসাইকেলে করে পালিয়ে যায় তারা। এতে ইউপি চেয়ারম্যানসহ প্রায় ০৫ জন আহত হয় এবং স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে নিয়ে আসে। এছাড়া পুলিশ আসার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

স্থানীয়দের মাধ্যমে আরও জানা যায়, ০৫ আগষ্টের আগে রাকিব আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিল। ০৫ আগষ্টের পরে ভোল পাল্টে তিনি গণ অধিকার পরিষদের রাজনীতির সাথে যুক্ত হোন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের সূত্র জানা যায়, ককটেল বিস্ফোরণে আহত হয়ে ০৫ জন চিকিৎসা নিতে আসে। এই সময় ০৪ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং একজনকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে রের্ফাড করা হয়েছে।

বারোঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক ইউপি সদস্য মো: মুসা বলেন, রাকিব ব্যাগে করে বম নিয়ে এসে ফুটাতে থাকে। এই সময় আমার নাতিসহ অনেক আহত হয়েছে। এছাড়া বারোঘরিয়া ইউনিয়নের পরিষদের চেয়ারম্যান হারুন আর রশিদও আহত হয়েছে।

বারোঘরিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হারুন আর রশিদ বলেন, বারোঘরিয়া বাজারে বসে চা খাচ্ছিলাম। এই সময় বাজারে বোমা বিস্ফোরণ করতে শুরু করেছে। বোমার ধোঁয়াতে আধার হয়ে গেছে। সে সময় আমাকে লাঠির বা অন্য কিছু দিয়ে আঘাত করে। পরে ধোঁয়ার আধারের মধ্যে দোকানের ভিতরে ঢুকে যায় এবং সেখানে অবস্থান করে প্রাণে বেঁচে যায়।

বারোঘরিয়া বাজারের কাপড়ের দোকানদার আতাউর রহমান বলেন, হঠাৎ করে বিকট শব্দে চতুর্দিকে আধার হয়ে যায়। এই অবস্থায় কোথায় যাবো, পালাবো কিছু ভেবে পাচ্ছিলাম না, একটা দ্বিধা দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়ে গেছিলাম। রাকিব মোটরসাইকেলে ছিল এবং তার সাথে আরোও দুইজন ছিল। তারা ককটেল মারছে আর চলে যাচ্ছে। রাকিব আগে আওয়ামী লীগ করতো। সে আগে থেকেই সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ ছিল বলেও জানান তিনি। 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের দায়িত্বরত চিকিৎসক আনোয়ার মাহমুদ বলেন, আমাদের এখানে পাঁচজন রোগী এসেছিলেন। তাদের কাছে জানতে পারি বারোঘরিয়াতে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে এবং সেখানে তারা আহত হয়েছে। পাঁচজনের মধ্যে একজনের অবস্থা আশংকাজনক। তার হাত যথাসম্ভব ভেংগে গেছে। তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করা হয়েছে এবং বাকিগুলোতে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির সিফতি বলেন, লোকজনের কাছে শুনেছি রাকিব বারোঘরিয়া বাজারে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। তবে যে বা যারাই ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে প্রশাসন তদন্ত করে তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসুক এটাই চাই।

তিনি আরোও বলেন, তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ উঠার কারণে গত ০৬ ফেব্রুয়ারি তাকে গণধিকার পরিষদ থেকে এক মাসের জন্য সাময়িকভাবে বরিস্কার করা হয়েছে এবং দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মতিউর রহমান বলেন, বারোঘরিয়া বাজারে ০৪ টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটেছে। প্রাথমিক ধারণা করা হচ্ছে ইউপি চেয়ারম্যান হারুন আর রশিদের সাথে পূর্ব শত্রুতার জেরে রাকিব ও তার লোকজন ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে। পুলিশ যাওয়ার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলেও জানান তিনি।

এমএএ/আআ


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর