প্রকাশিত:
২২ ডিসেম্বার ২০২৫, ২১:৩৩
চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুলিশের সংকেত অমান্য করে ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে দুই মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যুর ঘটনায় তাদের কবর জিয়ারত ও পরিবারের সাথে সৈজন্য সাক্ষাৎ করে শোক জানিয়েছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থী ও নবাবগঞ্জ সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি নুরুল ইসলাম বুলবুল।
জানা যায়, রবিবার (২২ ডিসেম্বর) সকালে নূরুল ইসলাম বুলবুল শোকাহত পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গভীর সমবেদনা জানান। এ সময় তিনি এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে নিহতদের কবর জিয়ারত করেন এবং তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করেন।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম, জেলা আমীর মাওলানা আবু জার-গিফারী, পৌর আমীর গোলাম রাব্বানীসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসীসহ প্রমুখ।
এসময় নূরুল ইসলাম বুলবুল এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা জানিয়ে মহান আল্লাহর কাছে নিহতদের জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব ও পরিবার-পরিজনদের ধৈর্য ধারণের তাওফিক কামনা করেন।
প্রসঙ্গত, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের সার্কিট মোড় এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে গাড়ির কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের জোড়বাগান নিবাসী আশরাফুল ইসলামের ছেলে সোহাগ এবং পোলাডাঙ্গা নিবাসী শাহআলমের ছেলে রিফাত মোটরসাইকেল যোগে সার্কিট হাউজ রোড দিয়ে শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। এই সময় ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা তাদের থামার সংকেত দেয়, কিন্তু তারা ট্রাফিক পুলিশের সংকেত অমান্য করে উচ্চ গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে।
এ সময় মোটরসাইকেল স্লিপ করে মহাসড়কে ট্রাকের নিচে পড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলে রিফাত মারা যান। স্থানীয় লোকজন সোহাগকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনিও মারা যান। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা ট্রাফিক পুলিশের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে শহরের শান্তিমোড় ও বিশ্বরোডে অবস্থিত পুলিশ বক্স এবং শহরের পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন দিয়ে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ ছাড়াও সোনামসজিদ-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয় এবং প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা ধরে বিক্ষুব্ধ জনতার বাধায় সড়কেই পড়ে ছিল রিফাতের মরদেহ। পরে যৌথ বাহিনীর সহযোগিতায় রিফাতের মরদেহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয় এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়কের যান চলাচল সচল হয়।
এছাড়া পুলিশ বক্স ও ফাঁড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করেছে জেলা পুলিশ। মামলায় ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত মিলিয়ে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়াও ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা শুরু করেছে পুলিশ।
এম.এ.এ/আ.আ
মন্তব্য করুন: