অপকর্মের দায় নিয়ে ফ্যাসিস্টরা পালিয়ে গেলেও ফ্যাসিজমের কালো ছায়া এখনো বাংলাদেশ থেকে যায়নি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে সিলেটের আলিয়া মাদরাসা মাঠে জামায়াতসহ সমমনা ৮ ইসলামী দলের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
জামায়াত আমির বলেন, অপকর্মের দায় নিয়ে ফ্যাসিস্টরা বাংলাদেশ থেকে পালিয়েছে। কিন্তু ফ্যাসিজমের কালো ছায়া বাংলাদেশ থেকে যায়নি। এক দল যে অপকর্ম করে চলে গেছে, আরেক দল দেশে সেই অপকর্মের দায়িত্ব নিয়েছে। এক দল চাঁদাবাজি করার কারণে জনগণের ঘৃণা কুড়িয়েছে, আর আরেক দল তার চেয়ে বেশি শক্তি দিয়ে চাঁদাবাজি করেছে। এক দল দখলদার বনতে গিয়ে জনগণ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে, আর আরেক দল বেপরোয়া দখলদার হয়ে পড়েছে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, দেশবাসী আশা করেছিল- অতীতের অপকর্মের পরিণতি থেকে শিক্ষা নিয়ে রাজনীতিবিদরা নতুন রাজনীতি শুরু করবেন। কিন্তু আমরা দুঃখের সঙ্গে দেখতে পাচ্ছি, একটি দল সেই পুরাতন ধারায় পড়ে আছে। তারা কোনো সংস্কারে রাজি না, তারা সনদ বাস্তবায়নে রাজি না। তারা গণভোটেও প্রথমে রাজি ছিল না, পরে ধাক্কায় ধাক্কায় রাজি হয়ে বলে গণভোট একদিনেই হতে হবে। তাছাড়া বাধ্য করেছে সরকারকে। এখন আবার কোথাও কোথাও আমরা ভিন্ন সুর শুনতে পাচ্ছি।
তিনি বলেন, যারা এতদিন নির্বাচন-নির্বাচন বলে জনগণকে বেহুশ করে তুলেছিল, এখন তাদের কেউ কেউ ভিন্ন সুরে কথা বলতে শুরু করেছে। এ লক্ষণ ভালো নয়। তারা বুঝতে পেরেছেন যে, তারা যেসব কর্মকাণ্ড বাংলাদেশে পরিচালনা করছেন, জনগণ আগামী নির্বাচনে তাদের দলকে লাল কার্ড দেখানোর জন্য প্রস্তুত হয়ে গেছে। এই লাল কার্ড দেখা থেকে বাঁচতে গিয়ে যদি কেউ আগামী নির্বাচনকে ভণ্ডুল করার চেষ্টা করে, আমরা মহান আল্লাহর ওপর ভরসা করে বলছি, তাদের সব ষড়যন্ত্র এ দেশের জনগণ ভণ্ডুল করে দেবে, ইনশাআল্লাহ।
জামায়াত আমির বলেন, কেউ যদি আবারও চিন্তা করেন জনগণের সমর্থন পাব না তাহলে বাঁকা পথে প্রশাসনিক ক্যু এর মাধ্যমে ক্ষমতায় যাব, তাদের বলব- বন্ধু সেই সূর্য ডুবে গেছে। এই সূর্য আর বাংলাদেশে উঠবে না। এখন নতুন সূর্যের উদয় হবে, সেই সূর্য কুরআন বুকে নিয়ে উদিত হবে, ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, বিশ্বের সব শান্তিকামী দেশকে আমরা সম্মান জানাই। কিন্তু কেউ যেন আর আমাদের ওপর দাদাগিরি করতে না আসে। আমরা আর কারও দাদাগিরি দেখতে চাই না, বরদাস্তও করতে চাই না। বাংলাদেশ চলবে মহান আল্লাহ তা’য়ালার নির্দেশ মোতাবেক এ দেশের জনগণের পছন্দে। এর বাইরে কারও পছন্দ-অপছন্দের কথা আমরা শুনতে চাই না।
হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, যারা অন্যদের তলপিবাহক হবেন, তাদের বলব- আগে যারা তাঁবেদারি করেছে, মেহেরবানি করে তাদের থেকে শিক্ষা গ্রহণ করুন। যারা চাঁদাবাজি করছেন, চাঁদাবাজি বন্ধ করুন। যারা দখলবাজি করছেন, দখলবাজি বন্ধ করুন। মানুষের ওপর জুলম বন্ধ করুন। যদি তারা বন্ধ না করেন, তাহলে তাদের আমরা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিচ্ছি, এসব অচিরেই বাংলাদেশে বন্ধ হবে, তখন কিন্তু কঠিন পরিণতি ভোগ করতে হবে।
ডেস্ক/ই.ই
মন্তব্য করুন: