জুলাই আন্দোলনে হত্যাযজ্ঞ চালানোর অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। অপর আসামি সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন রাজসাক্ষী হওয়ায় তাকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
হাসিনার ফাঁসির রায়: স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে যে বার্তা দিলো
সোমবার (১৭ নভেম্বর) রাতে স্থায়ী কমিটির বৈঠকের পর আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার দুই দোসরদের বিরুদ্ধে ঘোষিত রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিএনপি। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৈঠক শেষে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক ব্রিফিংয়ে এমন মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ২০২৪ এর ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানের মধ্যদিয়ে প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়েছে। এই দীর্ঘ রক্তাক্ত সংগ্রামে শত সহস্র বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মীসহ সমাজের সর্বস্তরের অসংখ্য নাগরিক গুম, খুন, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, মামলা-হামলা, নির্যাতন-নিপীড়ন ও অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হয়েছে। অবশেষে ছাত্র-গণঅভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতা-শ্রমিক, নারী-শিশুসহ সহস্রাধিক নাগরিকের আত্মদান, অন্ধত্ব, চিরপঙ্গুত্ব বরণের মধ্যদিয়ে ইতিহাসের জঘন্যতম ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও আওয়ামী বাকশালি শাসনামলের পতন হয়েছে।
সারা বিশ্ব পতিত স্বৈরাচারের বিচারের দাবি জানিয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, সারা বিশ্বের জনমত এবং বাংলাদেশের জনগণের দাবি ও প্রত্যাশা ছিল যেন পতিত স্বৈরাচার ও তার দোসরদের মানবতাবিরোধী ও নৃশংস, জঘন্য হত্যাকাণ্ড এবং গণহত্যায় অপরাধের বিচার করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দীর্ঘ বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বজায় রেখে আজকে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার দুই দোসরের বিরুদ্ধে রায় ঘোষিত হয়েছে।
রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল আরও বলেন, এই রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। আইনের বিধান অনুযায়ী সর্বোচ্চ সাজা প্রদান করা হয়েছে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার দোসর সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান কামালের। পুলিশের সাবেক আইজিপি চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে বিচারিক প্রক্রিয়ায় সহযোগিতার কারণে প্রাপ্য সাজা কমিয়ে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
জনগণকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, আইনের শাসন এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় দৃঢ়প্রতিজ্ঞ বিএনপি এ বিষয়ে জনগণকে সদা সর্বদা সচেতন থাকার আহ্বান জানাচ্ছে। একইসঙ্গে বিএনপি অন্যান্য মামলায় অভিযুক্তদের সুবিচারের দাবি জানাচ্ছে। কারণ আমরা মনে করি, দীর্ঘ ১৬ বছরের গুম-খুন ও বিচার বহির্ভূত হত্যার শিকার এবং ২০২৪ ছাত্র গণঅভ্যুত্থানে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের শিকার সহস্রাধিক শহীদের আত্মা শান্তি পাবে এবং তাদের পরিবার পরিজনদের ক্ষোভ কিছুটা হলেও প্রশমিত হবে।
ডেস্ক/ই.ই
মন্তব্য করুন: