[email protected] ঢাকা | মঙ্গলবার, ১৮ই নভেম্বর ২০২৫, ৪ঠা অগ্রহায়ণ ১৪৩২
thecitybank.com

চাঁপাইনবাবগঞ্জে বিএনপিতে কোন্দল, ব্যাপক প্রচার-প্রচারনায় মাঠে জামায়াতের প্রার্থীরা

নিজস্ব প্রতিনিধি:

প্রকাশিত:
১৭ নভেম্বার ২০২৫, ১৮:২৮

বাম দিক থেকে ড. কেরামত আলী, ড. মিজানুর রহমান ও নুুরুল ইসলাম বুলবুল। ছবি: সংগ্রহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি আসনে অনেক আগেই প্রার্থী ঘোষনা করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। অপরদিকে ৩ নভেম্বর বিএনপির প্রার্থী ঘোষণার পর আসনগুলোতে মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীরা অসন্তষ্ট প্রকাশ করেছেন। তিনটি আসনে মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ সড়ক অবরোধ, মশাল মিছিল ও রেলপথ অবরোধের মতো কর্মসূচী পালন করেছেন বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত প্রার্থীদের কর্মী ও সমর্থকরা।

অপরদিকে একক প্রার্থী থাকায় এবং নির্বাচনী পরিবেশ অনুকুলে থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি আসনেই ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছেন জামায়াতের নেতাকর্মীরা। তাদের দাবি, এইবার তিনটি আসনেই জিততে চাই তারা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনে জামায়াতের প্রার্থী হলেন, রাজশাহী মহানগরের আমীর ও শিবগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ড. কেরামত আলী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মিজানুর রহমান ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নুরুল ইসলাম বুলবুল।

জামায়াতের একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের তিনটি আসনেই বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে বিরোধ কাজ করছে আর এর সুযোগ কাজে লাগাতে চাই দলটি। অপরদিকে সনাতন সম্প্রদায়সহ দলমত, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে সকল ভোটারদের কাছে টানতে তাদের মাঝে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা ও যোগাযোগ রক্ষা করছেন জেলা জামায়াতের নেতাকর্মীরা।

জামায়াত নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর রবিউল ইসলাম রবি বলেন, বিগত দিনে আমরা দুই ভাইয়ের রাজনীতি দেখেছি। কিন্ত চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাসীর কোন উন্নয়ন দেখতে পায়নি। তাই এবার সাধারন মানুষ পরিবর্তন চাই। আমরা নির্বাচনী প্রচার প্রচারণায় কাজ করছি এবং সাধারন মানুষদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। এছাড়া ১৮ এর নির্বাচনে আমাদের মাঠে দাড়াতে দেওয়া হয়নি বরং গ্রেপ্তার আতংক নিয়ে নির্বাচনী মাঠে থাকতে হয়েছিল। সেইবার আমরা সুন্দরভাবে প্রচার প্রচারণা চালাতে পারলে ফলাফল অন্যরকম হতো।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-৩ আসনে প্রচারণায় ব্যাস্ত সময় পার করছেন নুরুল ইসলাম বুলবুল। ছবি: সংগ্রহীত

নাচোল উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের সাবেক নায়েবে আমীর ও জামায়াত নেতা মাইনুল ইসলাম মাসুদ জানান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী আমিনুল ইসলামকে পছন্দ করে না তার দলের নেতাকর্মীরাই। তিনি এবার নিজ দলের নেতাকর্মীদের ভোটই পাবেন না। আর আমাদের নির্বাচনী মাঠ ভালো আছে। ব্যাপক প্রচার প্রচারণা চলছে। মিজান ভাই শিক্ষক ও সজ্জন ব্যাক্তি হওয়ার কারণে সাধারন মানুষ তাকে গ্রহণ করছে সাধারন মানুষ। এই বার তিনটি আসনেই আমরা জিতবো ইনশাআল্লাহ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে প্রচারণায় ব্যাস্ত ড. মিজানুর রহমান। ছবি: সংগ্রহীত

রানিহাটি ইউনিয়নের জামায়াত নেতা আব্দুল ওহাব বিশ্বাস জানান, ০৫ আগষ্টের পর স্থানীয় ভিলেজ পলেটিক্স ও একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের হামলা মামলার কারণে দলটিকে দেখতে পারছেন না সাধারন মানুষ। আমরা দলমত নির্বিশেষে সাধারন মানুষের পাশে থাকছি। সবাইকে নিয়ে আগামীর চাঁপাইনবাবগঞ্জ গড়বো ইনশাআল্লাহ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনে নির্বাচনী প্রচারণায় ড. কেরামত আলী। ছবি: সংগ্রহীত

দূর্লভপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও শিবগঞ্জ উপজেলার নায়েবে আমীর গোলাম আজম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনে আমাদের প্রার্থীর মাঠের অবস্থা খুবই ভালো। আমরা সর্বোচ্চ প্রচার প্রচারণা চালাচ্ছি এবং মাঠে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সুসম্পর্ক রয়েছে। আশা করছি তাদের ভোটও পাবো। ইনশাআল্লাহ আমরা আগামী দিনে দাড়িপাল্লার বিজয় নিশ্চিত করবো ইনশাআল্লাহ।

অসহায় মানুষদের মাঝে ছুটে চলছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১ আসনের প্রার্থী কেরামত আলী। ছবি: সংগ্রহীত

নাচোল পৌর আমীর মনিরুল ইসলাম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনে আমাদের ভালো অবস্থান তৈরি হয়েছে। আগামী দিনে চাঁদাবাজ, দূনীতিমুক্ত দেশ গড়তে হলে জামায়াতের বিকল্প নাই। এই বিষয়গুলো সাধারণ লোকজন এখন বুঝতে পারছে। তাই তারা জামায়াতের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছে এবং আমাদের ভোটের পরিমান বাড়ছে।

প্রচারনায় ব্যাস্ত মিজানুর রহমান। ছবি: সংগ্রহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌর জামাতের আমির হাফেজ গোলাম রাব্বানী বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণের কাছে গিয়ে আমরা জানতে পারছি বিগত ৩০ বছর থেকে তারা বহু বিষয়ে বঞ্চিত এবং অবহেলিত রয়েছেন, তাই তারা পরিবর্তন চাচ্ছেন। সে হিসেবে আমাদের দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থী নূরুল ইসলাম বুলবুলকে আগামিতে বেছে নেবেন।

সাধারন ভোটারদের মাঝে নুরুল ইসলাম বুলবুল। ছবি: সংগ্রহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক আবু বক্কর বলেন, আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনকে টার্গেট করে তিনটি আসনেই নির্বাচনী প্রচারণায় মাঠে আছেন জামায়াতের প্রার্থীরাসহ নেতাকর্মীরা। তার ধারাবাহিকতায় নির্বাচনী গনসংযোগ, লিফলেট বিতরণ, পোস্টারিং, বিশিষ্ঠ ব্যাক্তির সাথে যোগাযোগ, সেন্টার ভিত্তিক যুব ও কর্মী বৈঠক, উপজেলাগুলোর ইউনিয়ন ও পৌরসভাগুলোর ওয়ার্ড ভিত্তিক সমাবেশের মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা চালানো হচ্ছে। হিন্দু সম্প্রদয়সহ অনান্য ধর্মালম্বীদের সাথে আলাদা মতবিনিময় সভা ও তাদের বিপদে আপদে থাকার মাধ্যমে তাদেরকে কাছে টানার চেষ্টা করছি এবং তাদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাচ্ছি। এছাড়া আওয়ামী লীগের চিহ্নিত নেতা বা কর্মী বাদে যারা সাধারন ভোটার তাদের সাথেও যোগাযোগ রাখছি। ০৫ আগষ্টের পর থেকে আমরা প্রতিহিংসা মূলক রাজনীতি কর্মকান্ড থেকে বিরত আছি। পরিবেশ এখনো আমাদের অনুকুলে আছে। আল্লাহ সহায় হলে তিনটি আসনেই আমরা বিজয় লাভ করবো ইনশাআল্লাহ।

এম.এ.এ/আ.আ


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর