বিএনপির স্বাক্ষরিত পৃষ্ঠা বাদ দিয়েই জুলাই জাতীয় সনদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন; এমন অভিযোগ তুলেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) দুপুরে রাজবাড়ী সদর উপজেলার খোলাবাড়িয়া গ্রামে জন্মান্ধ আব্দুল গফুর মল্লিককে আর্থিক সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে এ অভিযোগ করেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ড. ইউনুসের নেতৃত্বাধীন সরকারকে বিএনপিসহ আন্দোলনরত সব দল সমর্থন করেছিল। তার গঠন করা কমিশনের কাছ থেকে এ ধরনের প্রতারণামূলক কাজ মানুষ আশা করে না।’
রিজভী বলেন, ‘গত ৫ আগস্ট ভয়াবহ রক্তপিপাসু শেখ হাসিনার পতনের পর মানুষ চেয়েছে মুক্তভাবে সবকিছু করতে; মানুষ চেয়েছে তার স্বাধীনতার ও অধিকারের প্রয়োগ করতে। কিন্তু সেই অধিকারের যদি প্রয়োগ না হয়। শেখ হাসিনার আমলের চেয়ে হয়তো আমরা কিছুটা স্বাধীনতা ভোগ করছি, কিন্তু সামগ্রিক স্বাধীনতা ভোগ করার বিষয়টি হচ্ছে আগামীর জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ-সুষ্ঠু হবে কি না? কোনো কারিগরি বা ইঞ্জিনিয়ারিং হবে কি না? এই কথাগুলোও আসছে।’
তিনি বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা জন্মান্ধ গফুর মল্লিকের কাছে ছুটে এসেছি। আমরা তার পাশে দাঁড়িয়েছি। তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা দেশের বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে অসহায় মানুষের কাছে ছুটে যাচ্ছি।’
এ সময় আমরা বিএনপি পরিবারের আহ্বায়ক আতিকুর রহমান রুমন, সদস্য সচিব কৃষিবিদ মোকছেদুল মোমির মিথুন, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আসলাম মিয়া, রেজাউল করিম পিন্টু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ ও রাজবাড়ী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম.এ. খালেদ পাভেলসহ দলীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গফুর মল্লিক জীবনের অধিকাংশ সময় বাসে ও ট্রেনে ফেরি করে নারকেলের নাড়ু, টেস্টি হজমি ও বাদাম বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তিনি একাধারে আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ব্যক্তি, যিনি কখনোই ভিক্ষা করতে চাননি। বয়সের ভারে কুঁজো হয়ে গেছেন এবং শরীরের অধিকাংশ শক্তি হারিয়ে ফেলেছেন। তার স্ত্রীকে নিয়ে সংসার হলেও তাদের কোনো সন্তান নেই। কিন্তু নিজের সম্মান রক্ষার্থে তিনি নিজের হাতে তৈরি করা নারকেলের নাড়ু ও বাদাম বিক্রি করেই জীবন ধারণ করতেন।
২০২৩ সালের ২১ মার্চ ‘সংসার চলে না, তারপরেও ভিক্ষা করেন না’ শিরোনামে সময় সংবাদের ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে গফুর মল্লিকের কষ্টের জীবন নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। এরপর তার গল্প সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায় এবং কন্টেন্ট ক্রিয়েটর মুন্সী এনায়েত তার কাহিনী নিয়ে একটি ভিডিও তৈরি করেন, যা ৪০ মিলিয়ন ভিউ অর্জন করে। এরপর দেশের নানা প্রান্ত থেকে আর্থিক সহায়তা প্রাপ্তি হয় এবং বাদাম বিক্রি পেশা থেকে অবসর নেন গফুর মল্লিক।
গফুর মল্লিকের ভিডিওটি নজরে পড়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের। পরে তার নির্দেশে রাজবাড়ীর খোলাবাড়িয়া গ্রামের জন্মান্ধ গফুর মল্লিকের পাশে দাঁড়িয়েছে ‘আমরা বিএনপি পরিবার’। প্রধান অতিথি হিসেবে তার হাতে আর্থিক সহায়তা তুলে দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও ‘আমরা বিএনপি পরিবার’-এর প্রধান উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
ডেস্ক/ই.ই
মন্তব্য করুন: