[email protected] ঢাকা | বুধবার, ২৪শে ডিসেম্বর ২০২৫, ১০ই পৌষ ১৪৩২
thecitybank.com

কিছু বিপথগামী ছাড়া ছাত্রদলের সবাই নৈতিক চরিত্রের অধিকারী: রাকিব

চাঁপাই জার্নাল ডেস্ক:

প্রকাশিত:
২৬ অক্টোবার ২০২৫, ১৯:১৮

ছবি: সংগ্রহীত
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেছেন, আমরা বলি না যে আমাদের শতভাগ নেতাকর্মী জোবায়েদ ও সাম্যের মতো নৈতিক চরিত্রের অধিকারী। কিছু বিপথগামী ছাড়া ছাত্রদলের সবাই নৈতিক চরিত্রের অধিকারী।  
 
রোববার (২৬ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের মাঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা হাসিবুল ইসলামের অকাল মৃত্যু এবং জোবায়েদ হোসেনের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
 
রাকিব বলেন, আমরা সমাজে অবদান রাখা ব্যক্তিদের ভুলে যাই। তবে দোয়া মাহফিলের এই সংস্কৃতি ধরে রাখতে হবে। সবাইকে মনে রাখতে হবে— আমরা সত্যের পথে, নীতি–নৈতিকতার পথে থাকতে চাই। সর্বক্ষেত্রে অন্যায়ের প্রতিবাদ জানাতে হবে। জোবায়েদ হত্যার দিন স্থানীয়রা দেখেছে, যদি কোনো শিক্ষার্থীকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা তার প্রতিবাদ জানাবে। তবে স্থানীয়দের দ্বারা যেন ক্ষতির সম্মুখীন না হয়, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে।
 
তিনি আরও বলেন, স্বল্প সময়ের ব্যবধানে ছাত্রদলের একাধিক পদধারী নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। তারা জীবিত থাকাকালীন ছাত্রদলের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। আমরা দেখেছি, তাদের মৃত্যুর পর সবাই তাদের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, কারণ তাদের নৈতিক চরিত্র ছিল উঁচু মানের। আমরা বলি না যে আমাদের শতভাগ নেতাকর্মী জোবায়েদ ও সাম্যের মতো, কিছু খারাপ আছে। কিন্তু কিছু বিপথগামী ছাড়া ছাত্রদলের সবাই নৈতিক চরিত্রের অধিকারী। আমরা সেটা স্বীকার করে রাজনীতি করি। আজ পর্যন্ত কেউ বলতে পারবে না, আমরা অন্যায়কে প্রশ্রয় দিয়েছি। আমাদের কোনো সমর্থককে আমরা অস্বীকার করি না; পদ না থাকলেও তাদের স্বীকার করি।
 
যারা হত্যা ও গুমের শিকার হয়েছেন, তাদের স্মরণ করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এবং জবি শাখা ছাত্রদলের প্রশংসা করে রাকিব বলেন, শাহাদাত বরণের পর প্রশংসা ছাড়াও তাদের জীবিত অবস্থায়ও তারা প্রশংসার দাবিদার। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল সর্বদা গর্বের দাবিদার— তারা চাঁদাবাজদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বাসস্ট্যান্ড উচ্ছেদ করেছে।
 
এ সময় ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন নাসির বলেন, জুলাই–আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ছাত্রদলের ১৪২ জন শহীদ হয়েছেন। কিন্তু জুলাই-পরবর্তী সময়ে জোবায়েদের মতো নেতাকর্মীদের ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়েছে। পারভেজ হত্যার পর প্রশাসন গড়িমসি করেছে।
 
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমিন বলেন, জোবায়েদ ও হাসিবুলের এই দোয়া মাহফিলে একটি কবিতার লাইন মনে পড়ে যায়— এমন জীবন তুমি করিবে গঠন, মরণে হাসিবে তুমি কিন্তু কাঁদিবে ভুবন। তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। বাবা–মায়ের পর শিক্ষক সমাজই শিক্ষার্থীদের দুঃখ–কষ্ট নেয়, কিন্তু মৃত্যু কষ্টের। আমরা যাদের আঘাত করিনি, তাদের মৃত্যু সভায় উপস্থিত হতে হচ্ছে— যা অত্যন্ত কষ্টের।
 
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, হাসিব দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করার জন্য ভূমিকা রেখেছে। তার সেই লক্ষ্য পূরণে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে। একই সঙ্গে জোবায়েদের মৃত্যুর সঠিক বিচার নিশ্চিত করতে হবে। এতে তার আত্মা ও পরিবার শান্তি পাবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না।
 
তিনি আরও বলেন, সবার সহযোগিতায় আমরা দ্রুত প্রতিকার পেয়েছি। খবর পেয়েছি, এটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে দেওয়া হবে। আজ সকালেও আমরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বনামধন্য একজন আইনজীবী নিয়োগের জন্য ফাইল প্রস্তুত করেছি। নিয়মতান্ত্রিক সব উপায়ে আমরা চেষ্টা করব, যেন তাদের পরিবারের প্রত্যাশা অনুযায়ী সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা যায়।
 
শাখা ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিনের সঞ্চালনায় সভায় সভাপতিত্ব করেন আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল।
 
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দীন, গবেষণা পরিচালক অধ্যাপক ড. ইমরানুল হকসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও জাতীয়তাবাদী যুবদলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা।
এছাড়া হাসিবুল ইসলাম ও জোবায়েদ হোসেনের পরিবারের সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন।
 
ডেস্ক/ই.ই

মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর