প্রকাশিত:
৪ সেপ্টেম্বার ২০২৫, ১৬:০৯
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর এখনো আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তার নাক দিয়ে এখনো রক্ত পড়ছে। তিনি পুরোপুরি ট্রমাটাইজড। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বাগান গেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এসব কথা বলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান।
তিনি বলেন, নুরুল হক নুরকে সুস্থ বললেও তিনি সুস্থ নন। তার নাক বেঁকে গেছে, মুখে খেতে পারছেন না। একা একা উঠে দাঁড়াতে পারছেন না, মাথা ঘুরছে। ওয়াশরুমে ধরে নিয়ে যেতে হয়। পরিবেশ উপদেষ্টার সঙ্গে কথা হয়েছে। স্বাস্থ্য উপদেষ্টা বাইরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে কাজ শুরু করেছেন। শীঘ্রই নুরুল হক নুরকে দেশের বাইরে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হবে। আশা করছি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়া হবে। আজ আমি নুরুল হক নুরকে দেখেছি, তার যে অবস্থা—পরিকল্পিতভাবে হত্যার উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনীর কতিপয় সদস্য ও পুলিশ বাহিনীর কতিপয় সদস্য নুরুকে টার্গেট করে এই ধরনের হামলা চালিয়েছে।
রাশেদ বলেন, আমরা সরকারকে জানিয়েছি এই হামলার বিচার হতে হবে। আমরা গতকালও বিক্ষোভ সমাবেশের মাধ্যমে সরকারকে বলেছি যেহেতু জাতীয় পার্টি ফ্যাসিবাদের দোসর এবং তাদেরকে কেন্দ্র করেই তাদের রাজনীতিকে আবারও পুনর্বাসিত করার একটি পরিকল্পনা ছিল, সেই পরিকল্পনার বিরুদ্ধে নুরুল হক নুরসহ আমরা কথা বলেছি, মুখোশ উন্মোচন করেছি। তাদের পরিকল্পনা ভেস্তে যাওয়ায় নুরুল হক নুরসহ আমাদের শতাধিক নেতাকর্মীর ওপর আক্রমণ করা হয়।
তিনি বলেন, আমরা মাননীয় প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ জানাই, মহামান্য রাষ্ট্রপতিকে ধন্যবাদ জানাই, বিএনপির চেয়ারপারসন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ধন্যবাদ জানাই। এছাড়া উপদেষ্টা মণ্ডলীসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা নুরুল হক নুরকে দেখতে এসেছেন, তাদেরকে আমাদের দলের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই। এবং আওয়ামী লীগের সংগঠনের কার্যক্রম যেমন নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তেমনি জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলসহ যারা ফ্যাসিবাদের দোসর তাদের কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করতে হবে।
রাশেদ বলেন, হাসপাতালে নুরের ছয় দিন অতিবাহিত হয়েছে কিন্তু এখন পর্যন্ত সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনীর যারা এই হামলার সঙ্গে জড়িত, ফুটেজ থাকা সত্ত্বেও চিহ্নিত করার পরও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এটি এই সরকারের জন্য অত্যন্ত লজ্জার। আমরা মনে করি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার নির্দেশনা ব্যতীত এই ধরনের হামলার সুযোগ নেই। এই কারণে গণঅধিকার পরিষদ মনে করে নুরুল হক নুরসহ নেতাকর্মীদের ওপর যে হামলা হয়েছে, সেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে প্রত্যাহার করতে হবে। যিনি ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির ওপর হামলা হচ্ছে, রক্তাক্ত হচ্ছে এবং সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে তিনি কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারছেন না—এরকম নির্লজ্জ, বেহায়া, ছোটলোক স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশে থাকতে পারে না।
নুরুল হক নুর এখন পর্যন্ত সম্পূর্ণ সুস্থ হননি। তিনি যে সমস্যা ও সংকট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, সেগুলো এখনো কাটেনি। তার নাক দিয়ে এখনো রক্তক্ষরণ হচ্ছে, কাশির সঙ্গে রক্ত বের হচ্ছে, একা দাঁড়াতে পারছেন না, মাথা ঘুরছে। তার মস্তিষ্ক ঠিকমতো কাজ করছে না। তার ব্রেনে আঘাত করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর কতিপয় সদস্য ও পুলিশ বাহিনীর কতিপয় সদস্য সংবেদনশীল জায়গায় আঘাত করেছে। তার নাক পুরোপুরি বেঁকে গেছে। তিনি মুখ বড় করে খুলতে পারছেন না। তাহলে কেন বলা হলো নুরুল হক নুর সুস্থ? আমার মনে হয় নুরকে সুস্থ দেখানোর একটি পরিকল্পনা চলছে। এসব পরিকল্পনা করে কোনো লাভ হবে না। আগামীকাল বেলা ৩টায় শাহবাগ জাদুঘরের সামনে ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির সংহতি সমাবেশ হবে।
ডেস্ক/ই.ই
মন্তব্য করুন: