[email protected] ঢাকা | বুধবার, ২রা জুলাই ২০২৫, ১৭ই আষাঢ় ১৪৩২
thecitybank.com

আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ না হলে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে

শহীদদের স্মরণে দোয়া অনুষ্ঠানে মোহাম্মদ তাহের

চাপাই জার্নাল ডেস্ক:

প্রকাশিত:
১ জুলাই ২০২৫, ২০:০০

ছবি: সংগ্রহীত

যারা আজ ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠার পথ বন্ধ করতে সমর্থন ও সহযোগিতা করছে না, তারাই আবারো ফ্যাসিবাদ কায়েম করতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।

তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য পিআর পদ্ধতির কোনো বিকল্প নেই। পিআর পদ্ধতিতে ভোট ডাকাতির কোনো সুযোগ থাকবে না বলেই কেউ কেউ পিআর পদ্ধতির নির্বাচনকে ভয় পায়। সেজন্য তারা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে সমর্থন জানাচ্ছে না। যারা নির্বাচনের আগেই সংসদে ২৮০ আসন পাবে দাবি করে নিজেরা একক সরকার গঠনের ঘোষণা দেয়; তারাই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনে বাঁধা সৃষ্টি করবে।

আজ (মঙ্গলবার) জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে ‘জুলাই-আগস্ট’ গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের স্মরণে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠান পূর্বক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মোহাম্মদ তাহের বলেন, যারা পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের পক্ষে সমর্থন জানাচ্ছে না তারা মূলত হাসিনা মার্কা যেনতেন একটি নির্বাচন চায়।


আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ না হলে বাংলাদেশকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে উল্লেখ করে ডা. তাহের বলেন, জনগণের প্রত্যাশিত সরকার গঠন না হলে আবারো ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে। আবারো মানুষ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা হারাবে। রাষ্ট্র কর্তৃক জুলুমের শিকার হবে।

ডা. তাহের বলেন, চব্বিশের স্বাধীনতার মাধ্যমে মানুষ মতপ্রকাশের স্বাধীনতা লাভ করেছে। ১৯৪৭ সালে আমরা ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করেছি, এরপর ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের হাত থেকে স্বাধীনতা লাভ করেছি। কিন্তু মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিগত ৫৪ বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি। মানুষ স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ গ্রহন করতে পারেনি। বরং মানুষ শোষণের শিকার হয়েছে, বৈষম্যের শিকার হয়েছে, রাষ্ট্র কর্তৃক জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছে। যার কারণে সবশেষ ২০২৪ সালে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের জুলুমের হাত থেকে এই জাতি স্বাধীনতা লাভ করেছে। ২৪ এর স্বাধীনতা আর কাউকে ছিনিয়ে নিতে দেওয়া হবে না।

জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকিরের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় মহানগর হলরুমে অনুষ্ঠিত দোয়া অনুষ্ঠান পূর্বক আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা-৮ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মহানগর নায়েবে আমির এডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, ঠাকুরগাঁও-১ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মহানগর সহকারী সেক্রেটারি দেলাওয়ার হোসেন, ঢাকা-৫ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মহানগর সহকারী সেক্রেটারি মোহাম্মদ কামাল হোসেন, ঢাকা-৬ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মহানগর সহকারী সেক্রেটারি ড. আব্দুল মান্নান, ঢাকা-৯ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কবির আহমদ, ঢাকা-৪ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য সৈয়দ জয়নুল আবেদীন, ঢাকা-৭ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এফবিসিসিআই'র সাবেক পরিচালক হাজী হাফেজ এনায়েত উল্লাহ, মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য ও পল্টন থানা আমীর শাহীন আহমেদ খান।

বক্তারা সকলেই জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে অশ্রুসিক্ত নয়নে সে সময়কার স্মৃতিচারণ করেন।

তারা বলেন, ৩৬ দিনের সংগ্রামে ছাত্র-জনতা জীবন ও রক্ত দিয়ে ফ্যাসিবাদের হাত থেকে জাতিকে স্বাধীন করতে না পারলে মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অর্জিত হতো না। আজকে যারা মিডিয়ার সামনে বড় বড় কথা বলছে, যারা প্রস্রাব করে দিলে জুলাইয়ে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণ ছাত্ররা ভেসে যাবে বলে হেয় প্রতিপন্ন করছে, তারা বিগত ১৭ বছর কোথায় ছিল? জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদের পরিবার এবং আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের মতামত নিয়ে নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ করা সরকারের নৈতিক দায়িত্ব ছিল। সরকার সংস্কার ও গণহত্যার বিচার সম্পন্ন না করে নির্বাচন করলে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সম্ভব হবে না। তারা, রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার ও গণহত্যার বিচার নিশ্চিতের পাশাপাশি সরকারের সক্ষমতার প্রমাণ দিতে আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন এবং পরে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

সভা শেষে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের শহীদ ও আহত-পঙ্গুত্ব বরণকারীদের সহ ১৯৪৭ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত দেশের জন্য আত্মদানকারী সকল বীরের জন্য এবং দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় বিশেষ দোয়া মোনাজাত করা হয়।

ডেস্ক/ই.ই


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর