[email protected] ঢাকা | বুধবার, ২রা জুলাই ২০২৫, ১৭ই আষাঢ় ১৪৩২
thecitybank.com

আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ না হলে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে

যৌন হয়রানির অভিযোগে ইবি শিক্ষককে অব্যাহতি

চাপাই জার্নাল ডেস্ক:

প্রকাশিত:
১ জুলাই ২০২৫, ২০:২৭

কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যলয় ছবি: সংগ্রহীত

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যলয়ের (ইবি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। বডি শেমিং, বিভিন্ন সময় ভিডিও কল দেওয়া, ভিডিও কল না ধরলে পরীক্ষায় ফেল করানো, মার্ক দেওয়ার প্রলোভনে কু প্রস্তাবসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন এক ডজন নারী শিক্ষার্থী

গত ২২ জুন বিভাগের সভাপতি বরাবর এসব অভিযোগ দেন শিক্ষার্থীরা। এর প্রেক্ষিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল ইসলাম।

ক্যাম্পাস এবং ভুক্তভোগী ছাত্রী সূত্রে জানা যায়, তিনি প্রত্যেক ব্যাচেই বিভিন্ন ছাত্রীদের টার্গেট করে বাজে ইঙ্গিত এবং কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। তিনি দীর্ঘদিন থেকে এ কাজটি করে যাচ্ছেন। অনেকের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটলেও ফেল করে দেওয়ার ভয়ে তারা কাউকে কিছু বলতেন না। দুই একজন অভিযোগ করলে অধ্যাপক রেজাওয়ানুল ইসলাম সমাধান করে দেন। এর পরেও এমন ঘটনা ঘটলে ছাত্রীরা একসঙ্গে অভিযোগ করেন।

বিভিন্ন বিভাগের ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রত্যেক বিভাগেই এমন শিক্ষক রয়েছেন। যারা সুন্দরী মেয়ে দেখে বিভিন্ন প্রলোভনে তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে চান। রাজি হওয়া ওইসব শিক্ষার্থীদের নম্বর টেম্পারিং করে সিজিপিএ বাড়িয়ে দেন। অনেক শিক্ষক আছেন মেয়েদের ব্রেস্টফিডিং শেখান এবং জোর করে জড়িয়ে ধরার ঘটনাও ঘটে। কিন্তু নিজের সম্মান ও ভয়ে তারা প্রতিবাদ করেন না। শিক্ষার্থীরা পরিচয় গোপনে অভিযোগ দিলে সমস্যা প্রতিকারের ব্যবস্থা করলে অনেকের মুখোশ উন্মোচন হবে।

অভিযোগে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাকে রাতে ভিডিও কল দিতেন। আমি অডিও কল দিলে বলতেন, আমি ভিডিও কল ছাড়া কথা বলি না। মেয়েদের অজুলেশন নিয়ে কথা টাইম বিবাহিত মেয়েদের জন্য রিক্সি টাইম এবং টাইম পিরিয়ডের পর ১২-১৪ দিন। পরে ক্লাসের মধ্যে আমার নাম ধরে বলেন, এই সময় তুমি সাবধান থাকবা। বাজে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলার পাশাপাশি বডি শেমিং করাসহ কোর্সে ভালো রেজাল্ট করতে পারবো না বলে হুমকি দেন ওই শিক্ষক।

অভিযোগে আরেক ছাত্রী বলেন, ট্যুরে যাওয়ার সময় আমি সাঁতার পারি কিনা জিজ্ঞেস করেন ওই শিক্ষক। আমি যখন বলি সাঁতার পারি না তখন তিনি বলেন, তাহলে তো একসঙ্গে সাঁতার কাটতে পারব না। তিনি বডি ফিগারের বিষয়ে কম্প্লিমেন্ট দিতেন এবং ফার্স্ট ইয়ার থেকে চেক আউট করছেন বলে জানান। ভাইভাতে নিকাব নিয়ে কটাক্ষ করাসহ মার্ক দেওয়ার প্রলোভনে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ প্রস্তাব দিতেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থী বলেন, আমার সেক্সুয়ালি ডিজায়ার আছে কিনা? স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে মিলিত হয় কিনাসহ বিভিন্ন ব্যক্তিগত বিষয়ে প্রশ্ন করতেন ওই শিক্ষক। বিবাহবহির্ভূত শারীরিক সম্পর্ক, ফ্রি মির্ক্সিংয়ের উপকারিতা সম্পর্কে কথা বলতেন তিনি। এ ছাড়া আমার রুমে আসতে চাইতেন। এসব কারণে তিনি ডাকলেও আমি তার চেম্বারে যেতে চাইতাম না।

ভিযুক্ত শিক্ষক ড. আজিজুল ইসলাম বলেন, আমি এই বিষয়ে মেন্টালি আপসেট আছি। কোনো মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।

বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাজমুল হুদা বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর ওই শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন।

ডেস্ক/ই.ই


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর