বাংলাদেশে অবস্থানরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তায় ২৫ লাখ মার্কিন ডলার অনুদান দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে চীন। এই অনুদানকে স্বাগত জানিয়েছে জাতিসংঘ শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। ইউএনএইচসিআর জানায়, গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সাউথ-সাউথ কো-অপারেশন তহবিলের অর্থায়নে এই সহায়তা দেয়া হবে।
এর মাধ্যমে ২০২৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশে থাকা প্রায় ৪ লাখ ৫৮ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী, অর্থাৎ প্রায় ৯৪ হাজার পরিবারকে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) সরবরাহ করা সম্ভব হবে। এতে বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ শরণার্থী এলাকায় নিরাপদ ও পরিচ্ছন্ন রান্নার জ্বালানি নিশ্চিত হবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউএনএইচসিআরের প্রতিনিধি ইভো ফ্রেইসেন বলেন, বৈশ্বিক অর্থসহায়তা কমে যাওয়ার এই সময়ে চীনের অনুদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, এই সহায়তা শুধু রান্নার গ্যাস সরবরাহেই সীমাবদ্ধ নয়; এটি শরণার্থীদের মর্যাদা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও ভূমিকা রাখবে।
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, বিশ্বজুড়ে মানবিক সহায়তার তহবিল কমে আসায় ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর জীবন আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে চীন তার সহায়তা অব্যাহত রাখছে। তিনি জানান, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চীন ইউএনএইচসিআর ও বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে।
বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ১১ লাখ ৬০ হাজার রোহিঙ্গা শরণার্থী বসবাস করছে, যারা দৈনন্দিন প্রয়োজনের জন্য মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। ইউএনএইচসিআর জানায়, এলপিজি ব্যবহারের ফলে জ্বালানি কাঠের ওপর নির্ভরতা কমেছে, বেড়েছে নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টির মান। একই সঙ্গে ক্যাম্পসংলগ্ন বন ও পরিবেশ সুরক্ষায়ও ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে।
ইভো ফ্রেইসেন বলেন, ২০১৮ সালে এলপিজি সরবরাহ শুরু হওয়ার পর থেকে শরণার্থীদের আর জ্বালানি কাঠ সংগ্রহে বাইরে যেতে হচ্ছে না। এতে নারী ও মেয়েদের নিরাপত্তা ঝুঁকি কমেছে এবং শিশুরা স্কুলে বেশি সময় দিতে পারছে।
ইউএনএইচসিআর জানায়, রোহিঙ্গা শরণার্থী ও আশ্রয়দাতা জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই আন্তর্জাতিক সংহতি অত্যন্ত জরুরি। চীনের মতো অংশীদারদের সহায়তা বাংলাদেশে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় মানবিক কার্যক্রমকে আরও শক্তিশালী করবে।
ডেস্ক/ই.ই
মন্তব্য করুন: