[email protected] ঢাকা | বুধবার, ২রা জুলাই ২০২৫, ১৭ই আষাঢ় ১৪৩২
thecitybank.com

নামিদামি জুস কোম্পানি কিনছে পচা-ফাটা আম

চাপাই জার্নাল ডেস্ক:

প্রকাশিত:
১ জুলাই ২০২৫, ১৫:৫৫

প্রতীকি ছবি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সবচেয়ে বড় আমের হাট কানসাট বাজার থেকে পচা ও ফাটা আম সংগ্রহ করছে দেশের নামি দামি জুস কোম্পানিগুলো। তারা প্রতি কেজি ৫ টাকা থেকে শুরু করে ২০ টাকার মধ্যে কিনছে এসব আম। জুস কোম্পানির আম কেনার জন্য চলতি মৌসুমে শুধু কানসাট বাজারে অন্তত ১০টি আড়ত রয়েছে।

জুস কোম্পানির কেনা আমের দামকে অন্য আমের সঙ্গে তুলনা করে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি গণমাধ্যম সংবাদ প্রচার করে। এ নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে আম চাষিদের মধ্যে।

বুধবার সকালে শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট বাজার সরেজমিন ঘুরে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

উপজেলার মুসলিমপুর-হামেদনগর এলাকা থেকে আসা রফিক আলী বলেন, আমি প্রতিদিন আশপাশের এলাকা থেকে ঝরে পড়া আম কম দামে কিনে জুসের আড়তে বিক্রি করি। দুদিনে প্রায় ৩৫ ক্যারেট আম দিয়েছি আড়তে। কেজি প্রতি আমার ৩-৪ টাকা লাভ হয়। আমার মতো অনেকে আছে যারা ঝরে পড়া আম সংগ্রহ করে আড়তে বিক্রি করে।

কানসাট বাজারে গিয়ে কথা হয় জুস কোম্পানির জন্য আম কেনা আড়তদার মো. বাবুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, জুস কোম্পানির জন্য ৫-২০ টাকা কেজি দরে আম কেনা হচ্ছে। এসব আম তারা নামি দামি বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছে সরবরাহ করে থাকেন।

আরেক আম ক্রেতা মোরসালিন হক বলেন, বাজারের একেবারে না চলা পচা, ফাটা ও কীট আমগুলো কেনা হয় জুস কোম্পানির জন্য। এসব আম ৫-১৫ টাকার মধ্যে কেনা হচ্ছে। তিনি বলেন, তারা কোনো দিনই বাজারের সেরা আম কিনে না। শুধু নামেই প্রচার করে। বাস্তবতা দেখেই বুঝতে পারবেন।

মুক্তারুল নামে এক আম চাষি বলেন, সম্প্রতি ঈদ ও ছুটির কারণে আমের বাজার কিছুটা মন্দা ছিল। তবে যতদিন যাচ্ছে ততদিন আমের বাজার চড়া হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, কানসাটের আমকে ধ্বংস করতে পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এতে মাঠ পর্যায়ের আম উদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

আবদুস সামাদের আড়তের এক প্রতিনিধি রাজু বলেন ল্যাংড়া, লকনা, গুটি জাতের ঝরেপড়া পাকা আম ক্রয় করে প্রতিদিন আড়াইশ’ থেকে ৩শ’ ক্যারেট বিভিন্ন জুস কোম্পানির কাছে বিক্রি করা হয়। কোম্পানির জন্য এখানে আলাদাভাবে শ্রমিক রয়েছে। তাদের কাজ শুধু জুসের জন্য আম সরবরাহ করা।

এদিকে শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজাহার আলী বুধবার বিকেলে আম বাজার পরিদর্শন করে দাম নিয়েও সন্তুষ্টির কথা জানান।

তিনি বলেন, খিরসাপাত প্রতিমণ আম বিক্রি হচ্ছে ৪০০০ থেকে ৪৫০০ টাকা। ল্যাংড়া ও অন্যান্য গুঁটি জাতের আম বিক্রি হচ্ছে ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা। এছাড়া ব্যানানা আম বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৫ হাজার টাকা মণ দরে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান ও কৃষি সংশ্লিষ্টদের ধারণা চলতি মৌসুমে আমের বাণিজ্য হবে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৩৭ হাজার ৫০৪ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৮৬ হাজার টন।

ডেস্ক/ ই.ই


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর