প্রকাশিত:
৩ জুন ২০২৫, ২২:২১
দরপত্রের কার্যাদেশ অনুসারে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার চরমহনপুর এলাকায় ড্রেনের কাজ শুরু হয়েছে ২০২৪ সালের ১৫ই জানুয়ারি এবং ড্রেনের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল একই বছরের অক্টোবর মাসের ১০ তারিখে। কিন্ত গত ১৭ মাসে এখনো ড্রেনের কাজ শেষ করতে পারেনি কার্যাদেশ পাওয়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। রাস্তার পাশে ড্রেনের কাজ হাতে-গোনা কয়েকজন শ্রমিক দিয়ে মন্থরগতিতে কাজ চলায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে বর্ষা মৌসুমে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারনে কাদা পানিতে বেহাল দশা চলমান কাজ চলা ড্রেনের পাশের রাস্তার। কাদা পানিতে মটরসাইকেল ও অটোরিক্সার সাথে ঘটছে ছোট খাটো দূর্ঘটনা। এছাড়া কিছু অংশে ড্রেনের কাজ সম্পূর্ন হলেও সেগুলোতে স্লাব না দেওয়ার করনে রাস্তার পাশে বাড়িতে প্রবেশে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ফলে দীর্ঘায়িত হচ্ছে জনদূর্ভোগ, ঘটছে দুর্ঘটনাও। কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল ভূমিকা না থাকায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লোক দেখানো কাজ করছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। তবে, ড্রেনের কাজ বাস্তবায়নকারি প্রতিষ্ঠান চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগ বলছে ড্রেনের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য বারবার নোটিশ দেওয়া হচ্ছে তবে সাব ঠিকাদার স্থানীয় হওয়ায় প্রভাব খাটিয়ে তাদেরকে পাত্তা দিচ্ছে না।
সূত্র মতে, ওর্য়াল্ড ব্যাংকের অর্থায়নে লোকাল গর্ভমেন্ট কোভিড-১৯ রেসপন্স ও রিকভারি প্রকল্পের আওতায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার ১২ নং ওয়ার্ডের চকপাড়া এলাকায় ১১১০ মিটার ড্রেনের কাজ শুরু হয়। এর মধ্যে উক্ত এলাকার ইব্রাহিমের বাড়ি থেকে ব্রিজ হয়ে ফরিদ উদ্দিনের বাড়ি পর্যন্ত ১১০০ মিটার আরসিসি ড্রেন নির্মাণ এবং ১০ মিটার ক্রস ড্রেন নির্মাণ হবে। এর প্রযেক্টের চুক্তি মূল্য ধরা হয় প্রায় ১ কোটি ১৫ লাখ ৩৭ হাজার ২৭৮ টাকা।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এলাকায় খুঁড়ে রাখা ড্রেনের কাজ করছেন নামে মাত্র কয়েকজন শ্রমিক। ড্রেন নির্মান কাজের জন্য খোড়া কাদামাটি রাস্তার উপর থাকায় বর্ষা মৌসুমের পানিতে চলাচলের পিচ্ছিল হয়ে গেছে এবং রাস্তার পাশের বাড়ি ও দোকানগুলো চলাচলের জন্য বাঁশের মাচা ব্যাবহার করছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ পাওয়ার পর থেকেই ধীর গতিতে কাজ করছে। আংশিক ড্রেনের কাজ শেষ হলেও সেগুলোতে স্লাব দেওয়া হয়নি। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে ড্রেনের জলাবদ্ধতার কারনে ডেঙ্গুসহ নানান রোগ বালাই হতে পারে বলেও আশংঙ্কা করছেন তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা কবির হোসেন জানান, সম্পূর্ণ অপরিকল্পিতভাবে কাজ করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ড্রেনের জন্য মাটি খুঁড়ে সড়কের উপর রাখায় বর্ষা মৌসুমের রাস্তায় চলাচলে ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া ড্রেনের যে অংশগুলো নির্মাণ শেষ হয়েছে সেগুলোতে স্লাব না দেওয়ার কারনে চলাচলে সমস্যা হচ্ছে। আমার মটরসাইকেলটি বাসায় নেওয়া ও বের করার জন্য বাধ্য হয়ে বাঁশের মাচা তৈরি করেছি কিন্ত সেটিও কয়েকদিন পর পর ভেঙ্গে যায়। যার জন্য চরম ভোগান্তি পৌহাতে হচ্ছে। ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি তারা যেন দ্রুত ড্রেনের কাজ শেষ করে।
সাইফুদ্দিন নামের আরেক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, এখানে ড্রেন নিমার্নের কাজ চলছে তবে ড্রেনের স্লাব কখন দিবে না দিবে বলতে পারছি না। এছাড়া কাজ ধীর গতিতে চলছে এজন্য আমরা বহুমুখী সমস্যার মধ্যে আছি।
ড্রেনের কাজের অগ্রগতির বিষয়ে ঠিকাদার মোঃ আব্দুল মতিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
এবিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ তৌফিকুল ইসলাম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার চরমোহনপুর এলাকায় রাস্তার পাশে ড্রেনের কাজ প্রায় ৬০ ভাগ শেষ হয়েছে। তবে সময় মতো কাজ শেষ করতে না পারার কারণে সময় বর্ধিত করা হয়েছিল এই বছরের ২৮ শে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। এরপরেও কাজটি শেষ না হওয়ায় ঠিকাদারকে কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য কয়েক দফায় তিনবার নোটিশ করেছি। আমরা চেষ্টা করছি দ্রুত কাজটি শেষ করার জন্য। এছাড়া এই প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বরে শেষ হবে। একবার কাজের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে আবার কাজের মেয়াদ বাড়ানো সম্ভব নয় তাই প্রকল্পের মেয়াদের মধ্যেই কাজটি শেষ করার চেষ্টা করবো। তাই আমরা তাদের (ঠিকাদার) সাথে বসবো যাতে কাজটি সময় মতো (প্রকল্পের মেয়াদের মধ্যে) শেষ করা যায়।
আআ
মন্তব্য করুন: