গোমস্তাপুরে প্রণোদনার সার বীজ পেলো ৩২ হাজার কৃষক

চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩১ হাজার ৮৬০ জন কৃষক পেয়েছেন কৃষি প্রণোদনা। বিনামূল্যে বিভিন্ন ধরনের বীজ ও সার পেয়ে বেশ খুশি কৃষকরা। গ্রাম, পাড়া-মহল্লা থেকে এসে নিজ দায়িত্বে এই প্রণোদনা নিয়ে গেছেন তারা। তালিকাভুক্ত কৃষক ছাড়া অন্য কেউ এসে এই প্রণোদনা নিতে পারেননি। নারী কৃষকদেরও দেওয়া হয়েছে তালিকা অনুযায়ী।

উপজেলা কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে সুষ্ঠুভাবে বিতরণ করা হয় এসব প্রণোদনা। এদিকে প্রণোদনার ফসল করে অনেক কৃষক লাভবান হয়েছেন। সরকারি এই প্রণোদনা পেয়ে উচ্ছ্বসিত কৃষকরা।

উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চলতি অর্থবছরে তালিকাভুক্ত কৃষকদের মধ্যে আউস ধানের প্রণোদনা পেয়েছেন ৬ হাজার ৫০০ জন আর আমন ধানের ১ হাজার ৬০০ জন। প্রণোদনা হিসেবে তাদেরকে জনপ্রতি ৫ কেজি বীজ, ১০ কেজি করে ডিএপি ও এমওপি সার দেয়া হয়। বোরো মৌসুমে ৫ হাজার জন ২ কেজি করে হাইব্রিড এবং ৬ হাজার ১০০ জন ৫ কেজি করে উফসী জাতের বীজ, ১০ কেজি করে ডিএপি ও এমওপি সার পেয়েছেন। সরিষা প্রণোদনা পেয়েছেন ৬ হাজার ৯৫০ জন, গম ৩ হাজার জন, ভুট্টা ৯০০ জন, মাসকালাই ১ হাজার ২০০ জন, খেসারি ২০০ জন, মসুর ১৫০ জন, মুগ ১১০ জন এবং শীতকালীন পেঁয়াজ প্রণোদনা পেয়েছেন ১৫০ জন।

দোষীমনি কাঁঠাল গ্রামের কৃষক আবুল কালাম বলেন, লিজসহ ৪ বিঘা জমিতে আউস ধান চাষাবাদ করেছেন। এর মধ্যে তিনি ১ বিঘার জন্য প্রণোদনা হিসেবে ৫ কেজি ধানের বীজ, ১০ কেজি করে ডিএপি ও এমওপি সার পেয়েছেন। ওই বীজ বপন করে ভালো চারা তৈরি হয়েছে। রোপণকৃত চারা ভালো হয়েছে। ফসল উৎপাদন ভালো হবে বলে তিনি আশা করছেন। তিনি বলেন, এভাবে সরকার বিনামূল্যে বীজ ও সার দিলে আমরা কৃষকরা উপকৃত হবো।

আমন প্রণোদনা নিতে আসা বৃদ্ধ নুরুল ইসলাম বলেন, বিনামূল্যে বীজ ও সার পেয়ে আনন্দ লাগছে। কিন্তু এই বয়সে কৃষি অফিসে এসে নিতে কষ্ট হচ্ছে। তবে কষ্ট হলেও প্রকৃত কৃষকরাই পাচ্ছেন। যে কেউ নিতে পারছেন না। সরকার আমাদের মতো কৃষকদের প্রণোদনার মাধ্যমে সহযোগিতা করছেন।
গোমস্তাপুর ইউনিয়নের ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শেখ আল ফুয়াদ জানান, কৃষি প্রণোদনা পেয়ে কৃষকরা উপকৃত হচ্ছেন। এসব বীজ পেয়ে কৃষকরা মাঠে চাষাবাদ করছেন। ভালো ফলনে তাদেরকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

গোমস্তাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ সরকার বলেন, উপজেলার ৩১ হাজার ৮৬০ জনকে চলতি অর্থবছরে প্রণোদনা হিসেবে বিভিন্ন ধরনের বীজ ও সার দেয়া হয়েছে। বিনামূল্যে এসব প্রণোদনা পেয়ে কৃষকরা উপকৃত হয়েছেন। তিনি বলেন, উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি উৎপাদন হচ্ছে ধান, গম, সরিষাসহ বিভিন্ন ধরনের ফসল। এতে করে বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি আরো জানান, সঠিক সময়ে সঠিক কৃষককে কৃষিবান্ধব সরকারের প্রণোদনা তুলে দিতে বদ্ধপরিকর উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি বিভাগ।

এ বিষয়ে প্রণোদনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার নিশাত আনজুম অনন্যা বলেন, মাঠপর্যায়ে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ যাচাই-বাছাইপূর্বক প্রকৃত কৃষকদের তালিকা প্রণয়ন করে এবং কমিটির সর্বসম্মতিতে অনুমোদনপূর্বক কৃষকদের মধ্যে কৃষি প্রণোদনা বিতরণ করা হয়। এক্ষেত্রে, সরকারের কৃষি বিভাগের বরাদ্দসমূহ নীতিমালার আলোকে সুষ্ঠুভাবে কৃষকদের মধ্যে বণ্টন করা হয়।

আআ