[email protected] ঢাকা | মঙ্গলবার, ২৩শে ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ই পৌষ ১৪৩২
thecitybank.com

ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদ বিরোধী ঐক্য ছাত্র-জোটের দাবি

পরাজিত শক্তি ও ষড়যন্ত্রকারীদের ইন্ধন ও অংশগ্রহণে হামলা ও ভাংচুর

নিজস্ব প্রতিনিধি:

প্রকাশিত:
২১ ডিসেম্বার ২০২৫, ২০:৫৫

পুলিশ সুপার গৌতম বিশ্বাসের কাছে আবেদন দিচ্ছেন ছাত্রনেতারা। ছবি: চাঁপাই জার্নাল

চাঁপাইনবাবগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই তরুণের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ বক্স ও ফাঁড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনাকে ‘পরাজিত শক্তি ও ষড়যন্ত্রকারীদের ইন্ধন ও অংশগ্রহণ’ দাবি করে হামলা ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যাবস্থা নিতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার বরাবর আবেদন দিয়েছে ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদ বিরোধী ঐক্য ছাত্র-জোট। রবিবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাসের কাছে এই আবেদন পত্র দেওয়া হয়।

আবেদন ছাত্রনেতারা উল্লেখ করেন, “গত ১৯ ডিসেম্বর সার্কিট হাউজ মোড়ের সড়ক দূঘর্টনাকে কেন্দ্র করে ট্রাফিক বক্স, পুলিশ ফাঁড়ি ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নি সংযোগের পিছনে সরাসরি পরাজিত শক্তি ও ষড়যন্ত্রকারীদের ইন্ধন ও অংশগ্রহণ আমরা দেখতে পেয়েছি। তারা আবেগ প্রুত জনগনকে ‍উসকিয়ে দিয়ে এবং তাদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে দেশ বিরোধী এই ষড়যন্ত্র করে। যারা এই সন্ত্রাসী কার্যক্রমের সাথে জড়িত তাদেরকে দ্রুত সনাক্ত করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। মহান বিপ্লবী ওমসান হাদী ভাইয়ের মৃত্যুকে হেয় প্রতিপন্ন করতে ও জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্ন ঘটাতে তাদের এই ষড়যন্ত্র। আমরা কোন ভাবে দেশ বিরোধী এই ষড়যন্ত্রকে ছাড় দিতে চায় না।”

আবেদন পত্র দেওয়ার বিষয়ে ছাত্রনেতা মুত্তাসিন বিশ্বাস বলেন, “আমরা কখনো অন্যায় নাশকতাকে প্রশ্রয় দেইনি এবং দেবো না। গত ১৯ ডিসেম্বর সড়ক দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে যারা এ নাশকতা করেছে তাদের এবং তাদের কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। ঐক্যবদ্ধ সুন্দর চাঁপাইনবাবগঞ্জ গড়তে সবসময় কাজ করছি এবং করে যাবো। এই নাশকতার সাথে পতিত স্বৈরাচার সরকারের দোসররা জড়িত বলে মনে করি। তাই জড়িতদের দ্রুত সনাক্ত করে আইনের আওতায় নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি পুলিশ সুপারকে। এর জন্য পুলিশকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো।”

এই সময় উপস্থিত ছিলেন, ফ্যাসিবাদ ও আধিপত্যবাদ বিরোধী ঐক্য ছাত্র-জোট এর মোত্তাসিন বিশ্বাস, সাব্বির আহমেদ, আব্দুর রাহিম, আসিক তানভীর, হাদী, মাহদী এবং সাদ হোসাইন মুজাহিদসহ প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের সার্কিট মোড় এলাকায় চেকপোস্ট বসিয়ে গাড়ির কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা। বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার বাসিন্দা রিফাত ও সোহাগ মোটরসাইকেল যোগে সার্কিট হাউজ রোড দিয়ে শহরের দিকে যাচ্ছিলেন। এই সময় ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরা তাদের থামার সংকেত দেয়, কিন্তু তারা ট্রাফিক পুলিশের সংকেত অমান্য করে উচ্চ গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করে।

এ সময় মোটরসাইকেল স্লিপ করে মহাসড়কে ট্রাকের নিচে পড়ে যায় এবং ঘটনাস্থলে রিফাত মারা যান। স্থানীয় লোকজন সোহাগকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে তিনিও মারা যান। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা ট্রাফিক পুলিশের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে শহরের শান্তিমোড় ও বিশ্বরোডে অবস্থিত পুলিশ বক্স এবং শহরের পুলিশ ফাঁড়িতে আগুন দিয়ে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এ ছাড়াও সোনামসজিদ-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয় এবং প্রায় সাড়ে ৪ ঘণ্টা ধরে বিক্ষুব্ধ জনতার বাধায় সড়কেই পড়ে ছিল রিফাতের মরদেহ। পরে যৌথ বাহিনীর সহযোগিতায় রিফাতের মরদেহ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয় এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ মহাসড়কের যান চলাচল সচল হয়।

উল্লেখ্য, চাঁপাইনবাবগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় দুই তরুণের মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশ বক্স ও ফাঁড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনায় মামলা করেছে জেলা পুলিশ। মামলায় ১৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত মিলিয়ে ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া ঘটনার পর থেকে এখন পর্যন্ত ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে তৎপরতা শুরু করেছে পুলিশ।

এম.এ.এ/আ.আ


মন্তব্য করুন:

সম্পর্কিত খবর